বৈষম্যহীনতা কি?

 

বৈষম্যহীনতা কি?  Non-discrimination



বৈষম্যহীনতা কি?

বৈষম্যহীনতা বলতে চাকুরী বা পেশায় সম-সুযোগ সম-আচরণ নীতিকে বুঝানো হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে জাতি, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, রাজনৈতিক মতবাদ, ইত্যাদিকে চাকুরী ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের সুবিধা প্রদানের ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়না।

 

বাংলাদেশ শ্রম আইনে বৈষম্যহীনতা:

সম-কাজের জন্য সম-মজুরী প্রদান: কোন শ্রমিকের জন্য মজুরী নির্ধারণ বা নি¤œতম মজুরীর হার স্থিরীকরণের ক্ষেত্রে একই প্রকৃতির বা একই মান বা মূল্যের জন্য মহিলা এবং পুরুষ শ্রমিকগনের জন্য সমান মজুরীর নীতি অনুসরণ করতে হবে এবং সংক্রান্ত কোন বিষয়ে নারী-পুরুষ ভেদের কারণে কোন বৈষম্য করা যাবে না।

 

বৈষম্যহীন নীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ:

  • প্রতিটি কারখানার কাজের পরিবেশ সকল ধরনের আইন বহিভর্ বৈষ্যম্য থেকে মুক্ত থাকবে।
  • চাকুরীতে নিয়োগের সুযোগ, মজুরী নির্ধারণ, কর্মজীবনে সুযোগ সুবিধা, চাকুরীর অবাসন অথবা অবসর গ্রহনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্নভাবে প্রতিটি শ্রমিক/কর্মচারী নিজস্ব শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাদারীত্ব, কর্মক্ষমতা কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করবে
  •  চাকুরীতে নিয়োগদানের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমস্ত যোগ্য প্রার্থীকে আবেদনে উৎসাহিত করা এবং তাদের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আনা
  • আবেদনকারীদেরকে চাকুরীতে সমান সুযোগের অধিকার বিষয়ে অবহিত করা।
  • নিয়োগের বিজ্ঞাপনে এমন কোন সচিত্র উদাহরণ বা ব্যাখা না দেয়া, যার ফলে কাজ শুধুমাত্র নারী বা পুরুষের বলে মনে হয়।
  • নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল কর্মচারীকে পদোন্নতি, বদলী এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করা এবং তা যথাযথভাবে সদব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করা।
  • বেতন সহ চাকুরীর সমস্ত শর্ত সুবিধাদি, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একই শ্রেণিভক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন শ্রমিকের জন্য সমান হবে।
  • সমতার ভিত্তিতে কাজের শর্ত কাজের স্থান নির্ধারণ হবে।
  • নোটিশ, বুলেটিন কিংবা ঘোষনার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে সকল কর্মচারীকে সমভাবে অবহিত করা।
  •  শৃংখলামূলক পদক্ষেপ যাতে কোন ভাবেই স্বৈরাচার বা বৈষম্যের ভিত্তিতে না হয়, তার নিশ্চয়তা বিধানে নীতিমালা কার্যবিধি প্রণয়ন করা।
  •  যে সমস্ত কারণে শৃংখলামূলক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, সে সম্পর্কে এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সকল কর্মচারীকে অবহিত করা।
  •  শৃংখলামূলক পদক্ষেপ যাতে সবার প্রতি সমভাবে প্রযোজ্য হয় তার প্রতি লক্ষ্য রাখা।
  •  ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহনের কারণে কোন শ্রমিককের চাকুরীর অবসান না করা।
  • জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, মতবাদ, সামাজিক অবস্থান, বৈাহিক অবস্থা ইত্যাদি করনে চাকুরী ক্ষেত্রে কোন বৈষম্য করা যাবে না।
  • নারী-পুরুণ নির্বিশেষে, নিরপেক্ষ মানদন্ডের ভিত্তিতে কাজের শ্রেণি বিন্যাস করা এবং বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা।
  • বেতন নির্ধারণে নারী, পুরুষ বা কোন বিশেষ শ্রেণির প্রতি কোন ধরনের পক্ষ পাতিত্ব না করা।
  • কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান সব ধরনের কল্যাণমূলক সুবিধাদি সকল কর্মচারীর জন্য সমভাবে ব্যবহারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

 




মালিকের দায়িত্ব:

  • কারখানার সকল কর্মকান্ডে সমান সুবিধা আচরণ নিশ্চিত কল্পে বৈষম্যহীন নীতি কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
  •  বৈষম্যহীন নীতির ব্যাপারে সাবাইকে সচেতন করা।
  • বৈষম্যহীন নীতি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা।
  • কোথাও কোন ধনের বৈষম্য দেখা দিলে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
  • নির্দিষ্ট সময় পর পর নীতিটির পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।

 




শ্রমিক/কর্মচারীর দায়িত্ব:

  • বৈষম্যহীন নীতি সম্পর্কে জানা।
  • কর্মক্ষেত্রে কোথাও কোন বৈষম্য দেখলে দা কর্তৃপক্ষকে জানানো।
  • বৈষম্যহীন নীতি অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করা।

Post a Comment

0 Comments